Skip to content

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কোথায় কোথায় ব্যবহার করা যায়

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কোথায় কোথায় ব্যবহার করা যায় তা জানতে চান, চিন্তা করবেন না।আপনি যে মোবাইল ব্যবহার করে এই প্রকাশনাটি পড়ছেন সেটাও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অন্তর্ভূক্ত । আজকের পুরো পোষ্ট জুড়ে আমি বিভিন্ন টপিকের উপর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রসমূহ নিয়ে আলোচনা করবো।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে অত্যাধিক মানের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে।সেটা হোক যোগাক্ষেত্রে বা শিক্ষাক্ষেত্রে কিংবা চিকিৎসা ক্ষেত্রে। এই একুশ শতকের যুগে আপনি যেখানেই যান না কেন সব স্থানে, সব পরিবেশেই এই তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।

আমরা মানুষ হিসেবে অনেক সৌভাগ্যবান যে আমরা এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে জন্মেছি।অথচ এখন থেকে ১০০ বছর পূর্বেও এমন বিপ্লব ঘটেনি।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সবচেয়ে বিস্ময়কর আবিষ্কার হলো কম্পিউটার। এটা এমন এক যন্ত্র যা দিন দিন অসম্ভবকে সম্ভব করে দিচ্ছে। এর পরের আবিষ্কার হলো মোবাইল। কারণ মোবাইল আকারে অনেক ছোট হওয়া সত্বেও এটা কম্পিউটারের সমপরমাণ কাজ করা যায়।

এখন আসি অন্য কথায়।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কি?

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বলতে আমরা তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ প্রযুক্তির এক ধরনের একীভূত অবস্থাকে বুঝি। যেহেতু “তথ্য” ও “যোগাযোগ” দুটি আলাদা শব্দ।যা “প্রযুক্তি” নামক শব্দের সাথে জড়িত।

এখ্বনে “তথ্য প্রযুক্তি” বলতে আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে তথ্য সংরক্ষণ , সরবরাহ , সংযোজন , বিয়োজন করাকে বুঝায়।

আর যোগাযোগ প্রযুক্তিকে তো আমরা সবাই চিনি। যেমন আমি বলতে পারি, আপনি যে ফেসবুক ব্যবহার করে অন্যের সাথে কথোপকথন করছেন এটা যোগাযোগ প্রযুক্তির অন্তর্ভুক্ত। কেননা আপনি তার সাথে যোগাযোগ করছেন তবে সেটা আধুনিক পন্থায়।

তাহলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি হলো একটি দ্বিমুখী প্রক্রিয়া।যা সাধারণত একিভূত করে একনামে ডাকা হয়।এতক্ষণে বুঝে গেছে। “তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বলতে কি বুঝায়?”

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কোথায় কোথায় ব্যবহার করা যায়

নিচে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের কিছু ক্ষেত্র উল্লেখ করা হলোঃ শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, চিকিৎসা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ইত্যাদি।

শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার

শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কোথায় কোথায় ব্যবহার করা যায়  তা বলে শেষ করা যাবে না। তবে শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির সবচেয়ে বড় ভূমিকা হচ্ছে ই-লার্নিং।পড়া লেখার সবকিছুই এখন কার সম্ভব হয় ইন্টারনেট ব্যবহার করে।আপনার মনে হতে পারে ইন্টারনেট কি?এটা কি তথ্যপ্রযুক্তির অন্তর্ভুক্ত?

হ্যাঁ ভাই, ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তির অন্তর্ভুক্ত। এর মাধ্যমে তরুণ তরুণীরা শিক্ষাকে নির্ভরযোগ্য করে তুলছে। নিচে শিক্ষা ক্ষেত্রে ই-লার্নিং এর কিছু বর্ণনা তুলে ধরা হলো।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কোথায় কোথায় ব্যবহার করা যায়

১।ই-লার্নিংঃ

পৃথিবীতে জ্ঞান অর্জনের একটা সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি দীর্ঘদিন থেকে মোটামুটি একইভাবে কাজ করে আসছিল। তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতি হওয়ার পর প্রথমবার সেই পদ্ধতির এক ধরনের পরিবর্তন হতে শুরু করেছে এবং ই – লার্নিং নামে নতুন কিছু শব্দের সাথে আমরা পরিচিত হতে শুরু করেছি ।

ই – লার্নিং শব্দটি ইলেকট্রনিক লার্নিং কথাটির সংক্ষিপ্ত রূপ এবং এটা বলতে আমরা পাঠদান করার জন্যে সিডি রম , ইন্টারনেট , ব্যক্তিগত নেটওয়ার্ক কিংবা টেলিভিশন চ্যানেল ব্যবহার করার পদ্ধতিকে বুঝিয়ে থাকি । মনে রাখতে হবে ই – লার্নিং কিন্তু মোটেও সনাতন পদ্ধতিতে পাঠদানের বিকল্প নয় , এটি সনাতন পদ্ধতির পরিপূরক ।

উদাহরণ দেওয়ার জন্যে বলা যায় , শ্রেণিকক্ষে বিজ্ঞানের একটা বিষয় পড়ানোর সময় অনেক কিছুই হয়তো হাতে – কলমে দেখানো সম্ভব নয় যেমন- সূর্যগ্রহণ , চন্দ্রগ্রহণ ইত্যাদি ।

শ্রেণিকক্ষে পাঠ দিতে দিতে শিক্ষক ইচ্ছে করলেই মাল্টিমিডিয়ার সাহায নিয়ে আরও সুন্দরভাবে বিষয়টির দৃশ্যমান উপস্থাপন করতে পারেন । সেটি এমনকি Interactive- ও হতে পারে ।

আমরা সবাই জানি বাংলাদেশের জনগোষ্ঠী বিশাল । সে কারণে স্কুলের শিক্ষার্থী সংখ্যাও বিশাল । নানা ধরনের অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা থাকার কারণে আমাদের স্কুলগুলোতে দক্ষ শিক্ষকের অভাব রয়েছে ।

লেখাপড়ার জন্যে প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ বলতে গেলে নেই । ল্যাবরেটরি অপ্রতুল , ফলে হাতে – কলম্বে বিজ্ঞানের এক্সপেরিমেন্ট করার সুযোগ খুব কম । এই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্যে ই – লার্নিং অনেক বড় একটা ভূমিকা রাখতে পারে ।

দক্ষ একজন শিক্ষকের পাঠদান ভিডিও করে নিয়ে সেটি অসংখ্য স্কুলে বিতরণ করা যেতে পারে । একটি নির্দিষ্ট বিষয়কে বোঝানোর জন্যে অনেক ধরনের সহায়ক প্রক্রিয়া ছাত্রছাত্রীদের দেয়া যেতে পারে ।

একজন শিক্ষক চাইলে নিজেই তার পাঠদানে সহায়তা করার জন্যে প্রয়োজনীয় বিষয় তৈরি করতে পারেন এবং সেটি বারবার ব্যবহার করতে পারেন । বাংলাদেশের অনেক শিক্ষকই এটি ব্যবহার করছেন ।

সারা পৃথিবীতেই ই – লার্নিংয়ের জন্যে নানা উপকরণ তৈরি হতে শুরু করেছে । পৃথিবীর বড় বড় অনেক বিশ্ববিদ্যালয় অসংখ্য কোর্স অনলাইনে উন্মুক্ত করে দিয়েছে এবং যে কেউ সেই কোর্সটি গ্রহণ করতে পারে ।

বিষয়টি নিয়ে নানা ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা হচ্ছে এবং অনেক সময়েই একজন সেই কোর্সটি নেয়ার পর তার হোমওয়ার্ক জমা দিয়ে কিংবা অনলাইনে পরীক্ষা দিয়ে সেই কোর্সটির প্রয়োজনীয় ক্রেডিট পর্যন্ত অর্জন করতে পারছে ।

আমাদের বাংলাদেশও এতে পিছিয়ে নেই । বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তিবিদরা এ ধরণের বেশ কিছু ওয়ে পোর্টাল তৈরি করেছেন এবং সারা পৃথিবী থেকে যে কেউ বাংলা ভাষায় সেই কোর্সগুলো গ্রহণ করতে পারে বিশেষ করে কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে প্রশিক্ষণ নেয়ার উপযোগী এই ধরনের সাইটগুলো দেশে – বিদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে ।

২। ভর্তি ফলাফল প্রকাশ ও ভর্তি আবেদনঃ

আগেকার দিনে, তথা ২০ থাকে ২৫ বছর আগে আমাদের গ্রামের শিক্ষার্থীদের কোনো বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে গ্রাম থেকে শহরে আসতে হতো।কিংবা কোনো পরিক্ষার ফলাফল গ্রামের শিক্ষার্থীদের কাছে পৌছাতো ২ থেকে ৩ দিন পরে। আর এই সময়টা ছিলাম অসহনীয় যন্ত্রনার সময়।এখন এই যুগ পেরিয়ে আমরা আধুনিক যুগে প্রবেশ করেছি। যার জন্য আমাদের আর আগের মত ভর্তি হওয়ার জন্য শহরে যেতে হচ্ছে না। এখন বাড়িতে বসে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া সম্ভব হচ্ছে। এমনকি বর্তমানে দেশের ও বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ব বিদ্যালয়ের ভর্তির কাজ নিমিশেই ঘড়ে বসে করা সম্ভব হচ্ছে।

৩।বিবিধঃ

“তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কোথায় কোথায় ব্যবহার করা যায়” এটার উত্তর দিতে হলে আগে শিক্ষার কথাই বলতে হয়।কারণ জ্ঞান গ্রহণের বিকল্প নেই।তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে শুধু যে ই-লার্নিং আর ভর্তি আবেদন করা যায় তা নয়।এখানে জড়িত আছে আরো বিবিধ বিষয়।

যেমন, বিদ্যালয়ের আপকামিং ইভেন্ট সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের জানায় দেয়া, কম্পিউটার শিক্ষায় দক্ষ করে তুলা।এছাড়াও আমাদের দেশে বিদ্যালয় গুলোতে বিভিন্ন ক্যামেস্ট্রি ল্যাব আছে সেখানে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরে দক্ষ হচ্ছে। উদাহরণ দেতে চাইলে এভাবে হাজার টা উদাহরণ দেয়া যায়। পরের আলোচনায় আসি।

আরও পড়ুন,

 

চিকিৎসাঃ

আধুনিক চিকিৎসা এসেছে মুলত তথ্য ও যোগাযোগ প্রুহাত ধরেই। এই যুগের উন্নত ক্যামেস্ট্রি, আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং দক্ষ ডাক্তার, চিকিৎসা কে করে তুলেছে দৃষ্টিনন্দন।

আগে মানুষকে চিকিৎসাসেবা নিতে হলে দূর-দূরান্তে যেতে হতো শহর পেডি আরেক শহরে যেতে হতো। কিন্তু এখন তা আপনার কাছের শহর থেকে করতে পারবেন আর সেই প্রযুক্তির নাম হচ্ছে টেলিমেডিসিন সেবা।

এর মাধ্যমে যে কেউ অন্য কোন এক বিশেষজ্ঞের কাছে মিউজিক্যালি সেবা নিতে পারবেন। মনে করেন আপনার ডাক্তার ঢাকায় আছেন আর আপনি আপনার বাড়িতে রংপুরে আছেন। আপনি চাইলে টেলিমেডিসিন সেবার সভায় সহায়তায় আপনার সেই বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে সেবা নিতে পারবেন। এটিই হচ্ছে টেলিমেডিসিন সেবা।

এছাড়াও বর্তমান যুগের আধুনিক যন্ত্রপাতি যেমন এক্সরে, আল্ট্রাসনোগ্রাম, ইসিজি মাইক্রো স্ক্যানার এবং অতি শক্তিশালী ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্র প্রভৃতি দিয়ে মানুষ খুব সহজে রোগ নির্ণয় করতে পারছে। যার ফলে মানুষকে আর রোগ নিরাময়ে বেগ পেতে হচ্ছে না।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কোথায় কোথায় ব্যবহার করা যায়

 

কিছুদিন আগেই হয়তো দেখা যেত যে ক্যান্সার রোগীর কোনো নিরাময়ের ঔষধ নেই। কিন্তু বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা যায়। শুধু ক্যানসারই না বিভিন্ন রোগ যেমন টিউমার, ব্রংকাইটিস, বিভিন্ন ইনফেকশন, বড় ধরনের অপারেশন, টনসিল নিঃসরণ ইত্যাদি রোগ আধুনিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে।

 

বিনোদনঃ

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে বিনোদন জগতে একটা নতুন দিক উন্মোচিত হয়েছে। এটি ঘটেছে দুইভাবে। প্রথমত বিনোদন কিভাবে মানুষ গ্রহণ করবে সেই প্রক্রিয়া টি মৌলিক পরিবর্তন হয়েছে। দ্বিতীয়তঃ বিনোদনের ভিন্ন ভিন্ন মাধ্যমগুলোতে একটা গুণগত পরিবর্তন হয়েছে।

আগেকার দিনে একটা সময় ছিল যখন মানুষকে বিনোদন গ্রহণ করতে বাইরে যেতে হতো। যেমন, খেলা দেখতে হলে খেলার মাঠে যেতে হত, সিনেমা দেখতে চাইলে সিনেমা হলে যেতে হতো, গান শুনতে হলে গানের জলসা যেতে হতো।

কিন্তু এখন তা সম্ভব হচ্ছে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির বিভিন্ন যন্ত্রপাতি যেমন মোবাইল, কম্পিউটার, টিভি, বিভিন্ন স্মার্ট ডিভাইস এগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে। আমরা আমাদের বিনোদনের অনেকাংশ ঘরে বসে করতে পারছি।

এছাড়াও শিশুদের কথা চিন্তা করে অনেক কার্টুন তৈরি করা হচ্ছে। এগুলো বিভিন্ন শিক্ষামূলক কার্টুন যা শিশুদের বিনোদন পূরণ করছে। এছাড়াও তরুণ-তরুণীদের মধ্যে গেম খেলার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে তাদের অতিরিক্ত বিনোদন নিতে ঘরের বাইরে যেতে হচ্ছে না।

এছাড়া বর্তমানে মানুষজন বিনোদনের চাহিদা মেটাতে ইন্টারনেটে অনেক সময় ব্যয় করে। এর কারণ ইন্টারনেটের সকল ধরনের মুভি, গান, শর্টফিল্ম শিক্ষামূলক ভিডিও, কার্টুন সবকিছুই পাওয়া যায়। ফলে মানুষ দিন দিন বিনোদনের জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কে বেছে নিচ্ছে।

বিনোদনের জন্য এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহার এর আবার অনেক কুফল আছে। যেমন মানুষ আর আগের মতো খেলা খেলা খেলতে মাঠে যায় না। তারা ঘরে বসেই মোবাইলের মাধ্যমে গেম খেলে। অতিরিক্ত গেম খেলার ফলে মানুষের অনেক শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। যেমন, মানুষের চোখের সমস্যা হচ্ছে, মানুষ স্থল আকৃতির বা মোটা হয়ে যাচ্ছে। সামাজিক মূল্যবোধ কমে যাচ্ছে। একে অপরের সাথে ফিজিক্যালি যোগাযোগ অনেক অংশে কমে যাচ্ছে।

আমরা বিনোদনের জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে ব্যবহার করতে পারি তবে সেটা সীমিত পরিমাণে।

 

কৃষি:

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে কৃষিক্ষেত্র‌ ও কোনো অংশে পিছিয়ে নেই। যেহেতু বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ তাই বাংলাদেশে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার অনেকাংশে বৃদ্ধি পাচ্ছে।যেহেতু বাংলাদেশের জনসংখ্যা কৃষিজমি অপেক্ষা অনেক বেশি তাই বাংলাদেশের কৃষিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারের উপর অধিক গুরুত্ব দিতে হবে।

কৃষিকে সমৃদ্ধ করতে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কৃষিজ বিভিন্ন উদ্ভিদ কে বিকশিত করার জন্য বিভিন্ন উন্নত জাত আবিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া কৃষির পণ্যগুলো কে নিয়ে আলাদা ভাবে রিসার্চ করার জন্য বিভিন্ন গবেষণা ইনস্টিটিউট তৈরি হয়েছে। যেমন ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট ইত্যাদি।

বাংলাদেশের প্রধান কৃষিজ পণ্য হচ্ছে ধান, গম, পাট আলু। এগুলোকে প্রক্রিয়াজাতকরণ সংরক্ষণ ও পরিবহনের জন্য বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়। এরই অংশ হিসেবে বর্তমানে দূর-দূরান্তের গ্রামে ধান কাটা মেশিন, ধান ভাঙার মেয়াহিন, এমন কি আধুনিক যন্ত্রপাতি দ্বারা আলু উৎপাদন করা হচ্ছে।

এছাড়াও বাংলাদেশ কৃষিতে সঠিকভাবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে তৈরি হয়েছে বিভিন্ন কৃষি ভিত্তিক ওয়েবসাইট বা অনলাইন পোর্টাল এবং কৃষি কল সেন্টার।

 

গবেষণাঃ

গবেষণাত ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কোথায় কোথায় ব্যবহার করা যায় তার উদাহরণ অনেক।মানুষেই প্রকৃতিকে নিয়ে গবেষণার আদিকাল থেকে চলে আসছে। তবে গবেষণালব্ধ ফলাফল সংরক্ষণ কিংবা গবেষণার ত্বরান্বিত করা আদি যুগে খুব একটা সম্ভব ছিল না। কিন্তু বর্তমান যুগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিকাশের ফলে গবেষণা হয়ে গেছে অনেক সহজলভ্য। মানষ তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মহাকাশে পর্যন্ত নিজের জ্ঞানকে বিস্তৃত করতে সক্ষম হয়েছে। গবেষণা করার জন্য যে তথ্য প্রযুক্তির যন্ত্রটি আমাদের সবচেয়ে বেশি সহায়তা করে সেটি হচ্ছে কম্পিউটার। এর মাধ্যমে অনেক জটিল জটিল গাণিতিক সমস্যা খুব সহজেই সমাধান করা যায়।

আপনারা আমেরিকান মহাকাশ সংস্থা নাসার নাম শুনেছেন। তারা এই আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ও কম্পিউটার যন্ত্রটি ব্যবহার করেই মহাবিশ্বকে জয় করে ফেলেছে। এছাড়া আমাদের দেশের একদল বিজ্ঞানী পাটের জিনোম বা জন্মরহস্য আবিষ্কার করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।

তারা মূলত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করেই এ গবেষণা চালিয়েছেন।

আজকের বিশ্বের যত গবেষণায় হোক না কেন সব এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অন্তরালে হয়ে থাকে। কেননা এত রকমের তথ্য সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়।

 

প্রচার ও গণমাধ্যমঃ

আমরা টেলিভিশনে সংবাদ দেখি, বিভিন্ন ওয়েব পোর্টালে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি খবর পড়ি কিংবা রেডিওতে দেশ বিদেশের খবর শুনি। এ সবই কিন্তু তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অন্তর্গত।

শুরুর দিকে যখন তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির জ্ঞান সীমিত ছিল তখন ছিল রেডিও যার মাধ্যমে খবর প্রকাশ করা হত। কিন্তু ধীরে ধীরে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির বিকাশের ফলে বর্তমানে মানুষ কেবল নেটওয়ার্ক কিংবা ওয়ারলেস এর মাধ্যমে দূর-দূরান্তের খবর নিমিষেই দেখতে পাচ্ছে।

আপনি হয়তো টিভিতে খবর দেখেন কিংবা ইন্টারনেটে বিভিন্ন আর্টিকেল দেখেন সব তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে ব্যবহার করেই করছেন।

 

আবহাওয়া ও জলবায়ুঃ

আগে এমন একটা সময় ছিল যখন ঘূর্ণিঝড় কিংবা কোন টর্নেডোর পূর্বাভাস পাওয়া যেত না। ফলে অনেক মানুষের প্রাণহানি ঘটত।বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকা গুলোতে যেসব মানুষ বসবাস করে তাদের জন্য এটা ছিল অনেক হুমকি স্বরূপ। কিন্তু বর্তমান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিকাশের ফলে মানুষ ঘূর্ণিঝড় টর্নেডোর পূর্বাভাস অনেক আগেই জেনে যাচ্ছে যে অমুক এলাকাতে ঘূর্ণিঝড় হতে যাচ্ছে।

ফলে এতে প্রাণহানির সংখ্যা কমছে বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর যাচ্ছে।

এছাড়া আমরা যখন কোথাও বেড়াতে যাই তখন সেই স্থানের আবহাওয়া সম্পর্কে জানা প্রয়োজন হয়। আমরা খুব সহজে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে সে স্থানের আবহাওয়া সম্পর্কে জেনে নিতে পারি।

এসবই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ফল

Read more,

 

সামাজিক যোগাযোগঃ

মানুষ সমাজবদ্ধ জীব । সমাজে চলাফেরা ও বিকাশের জন্য মানুষে মানুষে যোগাযোগের প্রয়োজন । তবে এখন আইসিটিতে সামাজিক যোগাযোগ বলতে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মানুষে মানুষে মিথস্ক্রিয়াকেই বোঝায়। এর অর্থ হলো তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষ যোগাযোগ ও ভাব প্রকাশের জন্য যা কিছু সৃষ্টি , বিনিময় কিংবা আদান – প্রদান করে তাই সামাজিক যোগাযোগ ।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিকাশের ফলে বর্তমানে এই যোগাযোগ হয়ে পড়েছে সহজ , সাশ্রয়ী এবং অনেক ক্ষেত্রে নিরাপদ ।

ইন্টারনেটের ব্যবহার , ই মেইল , মোবাইল ফোন ও মেসেজিং সিস্টেম , ব্লগিং এবং সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মসমূহ ব্যবহার করে বর্তমানে আইসিটিভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ অনেকাংশে সহজ । ইন্টারনেটে গড়ে উঠেছে অনেক প্ল্যাটফর্ম , যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে পরিচিত ।

এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় দুইটি মাধ্যম হলো — ফেসবুক ও টুইটার

 

১।ফেসবুক ( www.facebook.com )

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কোথায় কোথায় ব্যবহার করা যায়

ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগ ব্যবস্থার একটি ওয়েবসাইট । ২০০৪ সালের ৪ ঠা ফেব্রুয়ারি মার্ক জুকারবার্গ তার অন্য বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে এটি চালু করেন । বিনামূল্যে যে কেউ ফেসবুকের সদস্য হতে পারে ।

ব্যবহারকারীগণ বন্ধু সংযোজন , বার্তা প্রেরণ এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলি প্রকাশ , আদান – প্রদান ও হালনাগাদ করতে পারেন । এছাড়া এতে অডিও ও ভিডিও প্রকাশ করা যায় ।

ফেসবুকে যেকোনো প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব পেজ যেমন খুলতে পারে , তেমনি সমমনা বন্ধুরা মিলে চালু করতে পারে কোনো গ্রুপ । www.stastica.com এর রিপোর্ট জুলাই- সেপ্টেম্বর ২০১৮ অনুযায়ী বিশ্বে facebook ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২.৭ বিলিয়ন

 

২।টুইটার ( www.twitter.com )

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কোথায় কোথায় ব্যবহার করা যায়

টুইটারও একটি সামাজিক যোগাযোগ ব্যবস্থা । তবে ফেসবুকের সঙ্গে এর একটি মৌলিক পার্থক্য রয়েছে । এটিতে ব্যবহারকারীদের সর্বোচ্চ ১৪০ Character- এর মধ্যে তাদের মনোভাব প্রকাশ ও আদান – প্রদান করতে হয় ।

এজন্য এটিকে মাইক্রোব্লগিংয়ের একটি ওয়েবসাইটও বলা যায় । ১৪০ অক্ষরের এই বার্তাকে বলা হয় টুইট ( tweet ) । টুইটারের সদস্যদের টুইট বার্তাগুলো তাদের প্রোফাইল পাতায় দেখা যায় ।

টুইটারের সদস্যরা অন্য সদস্যদের টুইট পড়ার জন্য সে সদস্যকে অনুসরণ বা follow করতে পারেন । কোনো সদস্যকে যারা অনুসরণ করে তাদেরকে বলা হয় follower বা অনুসারী ।

 

আজকে যা শিখলাম,

উপরের আর্টিকেলের পুরো অংশ জুড়ে আমি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কোথায় কোথায় ব্যবহার করা যায় তার বর্ণনা করেছি। এখানে শুধু চোখে দেখা কিছু তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে আমি আলোচনা করেছি। আমি চাইলে আরোও অনেক বিষয় আলোচনা করতে পারতাম।কিন্তু পোষ্টটি বড় হয়ে যাবে বিধায় আমি বেশী কিছু লেখলাম না।

এছাড়াও আমি বলে দিয়েছি, চিকিৎসা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার, এবং শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

আজকে এই পর্যন্তই।ভালো থাকবেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *