Skip to content

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা, সাথে পিডিএফ (পরীক্ষা ও রচনা প্রতিযোগিতার জন্য)

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা নিয়ে আমাদের এই আর্টিকেল সাজানো হয়েছে। যারা রচনা প্রতযোগিতা কিংবা পরীক্ষায় লেখার জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা খুজছেন। পুরো পোস্টটি পড়ুন। প্রথমে আমরা যথাসম্ভব ছোটো করে একটি রচনা তুলে ধরেছি। পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা ছোট লিখেছি। পরীক্ষার হলে তো আর বড় করে রচনা লিখা সম্ভব না। 

আর যারা রচনা প্রতিযোগিতার জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা খুজছেন, তাদের জন্য আমি সর্বশেষ একটি আলাদা ভাবে এবং অনেক বড় করে এই রচনা লিখেছি। এবং যারা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা পিডিএফ খুজছেন তারা এই পোস্টের একদম নিচে চলে যান। সেখানেই খুজে পাবেন পিডিএফ ডাউনলোড করার লিংক।

 

পরীক্ষায় লেখার জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা

 

ভূমিকা :

একবিংশ শতাব্দীর এ পৃথিবীকে বলা হচ্ছে প্রযুক্তিনির্ভর পৃথিবী । কারণ প্রযুক্তি এখন মানুষের হাতের নাগালে । তথ্য সংগ্রহে বইনির্ভরতা জনপ্রিয়তা হারিয়েছে বেশ ক’বছর আগেই । সে স্থান দখল করেছে কম্পিউটার , মোবাইল , ট্যাবলেটসহ আরও অত্যাধুনিক সব ডিভাইস । এখন তথ্য সংগ্রহের মূল কাজ চলে ইন্টারনেট থেকে । ইন্টারনেটের বদৌলতে সারা পৃথিবী এখন মানুষের তালুবন্দি । বলা হচ্ছে , পৃথিবীর সকল সভ্য মানুষ প্রযুক্তির এ বিপ্লবে শামিল হবে । তথ্য পৌছে যাবে সবার পকেটে ।

 

তথ্যপ্রযুক্তি কী : 

তথ্য ও প্রযুক্তি দুটি শব্দের মেলবন্ধনে একটি সামগ্রিক ধারণা আমাদের সামনে ফুটে ওঠে । আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে তথ্য সংরক্ষণ , সরবরাহ , সংযোজন , বিয়োজন করাই হলো তথ্যপ্রযুক্তি । এ বিষয়টির মাধ্যমে পৃথিবীর তাবৎ তথ্যকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনা হয় । কারণ তথ্যই সম্পদ— আর এ সম্পদের সঠিক ব্যবহার করতে শৃঙ্খলা অত্যাবশ্যক । সামগ্রিক তথ্যকে আধুনিক নানা দৃষ্টিকোণ থেকে প্রয়োজনমাফিক মানুষের সামনে পরিবেশন করাই তথ্যপ্রযুক্তির কাজ ।

তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষে ডিজিটাল কম্পিউটার : 

ডিজিটাল কম্পিউটারই তথ্যপ্রযুক্তিতে সমগ্র বিশ্বে বিপ্লব ঘটিয়েছে । আধুনিক জীবনযাপনের প্রায় সর্বাংশ জুড়েই রয়েছে কম্পিউটারের অস্তিত্ব । শিল্প , সাহিত্য , বিনোদন , ব্যবসা সবই এখন কম্পিউটারের ওপর নির্ভরশীল । শিক্ষার ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়েছে ডিজিটাল কম্পিউটারের সামগ্রিক বিস্তৃতির কারণে । ই – কমার্সের বদৌলতে পৃথিবীব্যাপী পণ্যের যে সম্ভার সৃষ্টি হয়েছে তা কম্পিউটারের কারণেই সম্ভব হয়েছে । বর্তমান সময়ে কম্পিউটারই মানুষকে সৃজনশীল হতে প্রেরণা জোগাচ্ছে ।

তথ্যপ্রযুক্তি ও ইন্টারনেট :

বিশ্বব্যাপী আজ যে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সৃষ্টি হয়েছে তার মূল কারিগর ইন্টারনেট । ইন্টারনেটের মাধ্যমেই আমরা জুড়ে যাচ্ছি সমগ্র পৃথিবীর কম্পিউটারের সাথে । সাধারণ কোনো তথ্যের জন্য এখন ইন্টারনেটের বিকল্প নেই । খবরের কাগজ , গবেষণা জার্নালসহ নানা পুস্তকাদি মানুষ এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করেই পড়ে থাকে । কেনাকাটার সবচেয়ে বড়ো মাধ্যম এখন ইন্টারনেট । ফেসবুক , টুইটার , স্কাইপ , হোয়াট্সঅ্যাপ ইত্যাদির কল্যাণে বন্ধুত্ব , আড্ডাসহ সামাজিক যোগাযোগ এখন ইন্টারনেটনির্ভরতার পর্যায়ভুক্ত । বিজ্ঞাপন বা নির্বাচনি প্রচারণা চালানোর জন্য এখন ইন্টারনেটের সাহায্য নেওয়া হয় । দূর – দূরান্তে মানুষের নানা অজানা বিষয় আজ ইন্টারনেটের বদৌলতেই আলোর দেখা পাচ্ছে । এককথায় বলতে গেলে সরল কিংবা জটিল , সহজ কিংবা কঠিন , গুরুত্বপূর্ণ কিংবা তুচ্ছ , সব কাজই এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে করা হচ্ছে । যত দিন যাচ্ছে এর ব্যবহার তত বৃদ্ধি পাচ্ছে । বিজ্ঞানী , সাহিত্যিক , শিল্পীসহ নানা মানুষ তাদের যাবতীয় সৃষ্টিকর্মের কথা উপস্থাপন করছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ।

মোবাইল ফোন ও তথ্যপ্রযুক্তি : 

মোবাইল ফোন এখন মানুষের হাতে হাতে । এক সমীক্ষায় দেখা গেছে , বর্তমানে টুথব্রাশ ব্যবহারকারীর চেয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি । তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক প্রসারে মোবাইল ফোন অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে । বর্তমানে মোবাইল ফোনের ব্যবহার শুধু কথা বলার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি । স্মার্ট মোবাইল । ফোনের মাধ্যমে তথ্য আদান – প্রদানের যাবতীয় কাজ করা সম্ভব হচ্ছে । মোবাইল ফোনকে মানুষ অনেক ক্ষেত্রেই কম্পিউটারের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করছে । ফলে তথ্য নিমেষেই মানুষের হাতের তালুতে বন্দি হয়ে যাচ্ছে ।

 

তথ্যপ্রযুক্তির গুরুত্ব : 

তথ্যই মানুষের সকল জ্ঞানের উৎস । তাই তথ্যের প্রবাহকে কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাঘ না । তথ্যের মাধ্যমেই মানুষ অজানাকে জেনে সমৃদ্ধ হয় । মানুষের ভেতরের জ্ঞানস্পৃহাকে তথ্যের মাধ্যমেই সন্তুষ্ট করা সম্ভব । যেকোনো সমস্যাকে এখন সমস্যা হিসেবে না দেখে সম্ভাবনা হিসেবে দেখা হয় । তা সম্ভব হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তির এই অবাধ প্রবাহের কারণেই । তাই একবিংশ শতাব্দীর মানুষের জীবনে তথ্যপ্রযুক্তির গুরুত্ব অপরিসীম ।

তথ্যপ্রযুক্তির ভবিষ্যৎ : 

দিন দিন তথ্যপ্রযুক্তি উৎকর্ষের পথ ধরেই হাঁটছে । যেভাবে এসময়ে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে , ঠিক সেভাবেই বা তার চেয়ে উন্নততরভাবে ভবিষ্যতে তথ্যপ্রযুক্তিকে ব্যবহার করা হবে । আজ যাকে অসম্ভব বলে বোধ হচ্ছে কাল হয়তো তাকেই তথ্যপ্রযুক্তির বদৌলতে সম্ভব করা যাবে । আশা করা যায় , পরবর্তীকালে তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে আরও উন্নততর গবেষণা হবে এবং মানুষের কল্যাণে তা ব্যবহৃত হবে ।

উপসংহার :

তথ্যপ্রযুক্তির ওপর নির্ভরতা মানুষকে নির্ভার করেছে বহুভাবে । হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে গোটা পৃথিবীকে । এ কারণে মানুষ আজ এত বেশি তথ্য সম্পৃক্ত । যার কাছে তথ্য নেই সে নির্ধনের কাতারে শামিল হচ্ছে । তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নই পৃথিবীকে সমৃদ্ধি এনে দিচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও দেবে বলে আমরা বিশ্বাস করি ।

এখানে একটি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি  রচনার নমুনা দেয়া হলো

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা (পিডিএফ)

 

পিডিএফটি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন



রচনা প্রতিযোগিতার জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা।

ভূমিকাঃ

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বলতে আমরা তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ প্রযুক্তির এক ধরনের একীভূত অবস্থাকে বুঝি । টেলিযোগাযোগ , কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ও তৎসম্পর্কিত সফটওয়্যার , তথ্য সংরক্ষণ , অডিও – ভিডিও সিস্টেম ইত্যাদির সমন্বয়ে গঠিত এ ব্যবস্থার মাধ্যমে একজন ব্যবহারকারী খুব সহজে তথ্য গ্রহণ , সংরক্ষণ , সঞ্চালন ও বিশ্লেষণ করতে পারেন । এর ব্যাপক ব্যবহারের ফলে বর্তমান বিশ্ব মানুষের জন্য শ্রেয় হতে শ্রেয়তর হচ্ছে । সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত কাজ থেকে রাষ্ট্রের বড় বড় কাজে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অবাধ ব্যবহার হচ্ছে । এখন অনেক কাজ সহজ হয়ে গেছে এবং নতুন নতুন কাজ সৃষ্টি হচ্ছে এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যাণে ।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারঃ

দৈনন্দিন জীবনে প্রায় সব ক্ষেত্রেই এখন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রভাব আছে । তার মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ব্যবহার উল্লেখ করা হলো :

  •  বিদেশ থেকে সহজেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে টাকা পাঠানো । 
  •  মোবাইল ফোনেই পরীক্ষার ফলাফল জেনে নেওয়া । ৩. ঘরে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে চাকরির দরখাস্ত করা ।
  • মোবাইলের মাধ্যমেই ট্রেনের টিকেট কাটা ।
  •  প্রয়োজনীয় তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে ইন্টাররেটের মাধ্যমে জেনে নেওয়া ।
  •  বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে নাগরিক সেবাসমূহ অনলাইনের মাধ্যমে জেনে নেওয়া ।
  • একজন শিক্ষার্থীর শ্রেণির কাজের কঠিন সমস্যাটি ইন্টারনেট ব্যবহারের মধ্যমে সাহায্য নেওয়া।

এছাড়াও ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা ভর্তি পরীক্ষার অনলাইন আবেদন , চাকুরির সন্ধান , সংবাদপত্র , একে অপরের সাথে ভিডিও কথাবার্তা , চিঠি আদান – প্রদান , সরকারি – বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুসন্ধান , পড়াশোনা , ঘরে বসেই অর্থ উপার্জন ( ফ্রিল্যান্সিং ) , লেন – দেন , ব্যবসা বাণিজ্যসহ অনেক কিছুই করতে পারি ।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিকাশেরর ফলে বর্তমানে যোগাযোগ হয়ে পড়েছে সহজ , সাশ্রয়ী এবং অনেক ক্ষেত্রে নিরাপদ । ইন্টারনেটের ব্যবহার , ই -মেইল , মোবাইল ফোন ও মেসেজিং সিস্টেম , ব্লগিং এবং সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মসমূহ ব্যবহার করে বর্তমানে আইসিটিভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ অনেকাংশে সহজ ।

প্রচলিত কর্মক্ষেত্র এবং পুরাতন ব্যবসা – বাণিজ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে কর্মীদের দক্ষতা , জবাবদিহি এবং স্বচ্ছতা বেড়েছে । অন্যদিকে এর ফলে সেবার মানও উন্নত হয়েছে । বর্তমানে দেশের অধিকাংশ চাকরি ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের সাধারণ দক্ষতা একটি প্রাথমিক যোগ্যতা হিসেবে ধরা হয় ।

ব্যাংক , বিমা থেকে করে বহুজাতিক কোম্পানি , সরকারি দপ্তরে কাজ করার জন্য ওয়ার্ড প্রসেসর থেকে উপস্থাপনা সফটওয়্যা ইন্টারনেট ব্রাউজিং থেকে ই – মেইল , নানান ধরনের বিশ্লেষণী সফটওয়্যার ইত্যাদিতে দক্ষ হতে হয় ।

পাশাপশি বিভিন্ন বিশেষায়িত সফটওয়্যার ( যেমন : ব্যাংকিং সফটওয়্যার ) ব্যবহারেও পারদর্শিতা অর্জন করতে হয় । অন্যদিকে আইসিটি নিজেই একটি বড় আকারের কর্মবাজার সৃষ্টি করেছে । হার্ডওয়্যার , সফটওয়্যার থেকে করে ওয়েবসাইট নির্মাণ , রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি এখন নতন দক্ষ কর্মীদের জন্য একটি বিরাট কর্মক্ষেত্র ।

কেবল দেশে নয় , তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ কর্মীরা দেশের বাইরে কোনো প্রতিষ্ঠানে অথবা স্বতন্ত্রভাবে কাজ করতে পারে এই কাজের একটি বড় অংশ দেশে বসেই সম্পন্ন করা যায় । আউটসোর্সিং করে এখন অনেকেই বাংলাদেশে জন্য মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে ।

 

একসময় ছিল যখন পরীক্ষার আবেদন করার জন্য হেটে হেটে নদীর ঘাটে যাওয়া , সেখান থেকে নৌকা করে পার হয়ে শহরে যাওয়া , সেখানে দরখাস্ত টাইপ করে , তারপর সেটি পাঠানো । কত কাজ ! ফলে অনেক সময়ের প্রয়োজন হতো ।

কিন্তু বর্তমানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসেই পরীক্ষার আবেদন কয়েকমুহুর্তের মধ্যে করা যায় ।

তথ্য প্রযুক্তির উপকরণঃ

তথ্য প্রযুক্তির উপকরণ বলতে আধুনিক প্রযুক্তিময় যন্ত্রপাতি গুলোকে বুঝায়। বর্তমান তথ্য প্রযুক্তি হাজার হাজার যন্ত্রপাতি সম্বলিত। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি বা উপকরণ নিম্নরূপ

  • কম্পিউটারঃ কম্পিউটার আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির বাহক। এটির মাধ্যমেই আজকের তথ্যপ্রযুক্তি বিকশিত। আবার এটিই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উপকরণ। যেকোনো গবেষণা, হিসাব নিকাশ, তথ্য সংরক্ষণ, তথ্য প্রক্রিয়াকরণ কম্পিউটার ব্যবহার করে খুব সহজেই করা যায়।
  •  মোবাইল : বর্তমানে সব থেকে বেশি ও কম খরচে যোগাযোগের মাধ্যম হচ্ছে মোবাইল ফোন । এটির মাধ্যমে যেকোনো স্থানে যোগাযোগ করা সম্ভব । এমনকি ইমেইল ও ছবি আদান – প্রদান করা যায় ।
  •   ফ্যাক্স : ফ্যাক্সের মাধ্যমে জরুরি লিখিত তথ্য ও ছবি তাৎক্ষণিকভাবে প্রেরণ করা যায় । ফলে ব্যবসায়িক কার্যক্রম বৃদ্ধি পায় ।
  •   ই – মেইল : ই – মেইল ব্যবসার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ । কারণ এর মাধ্যমে দ্রুততার সঙ্গে লিখিত চুক্তিপত্র বা পণ্যের ছবি ক্রেতার কাছে পাঠানো যায় ।
  •   ইন্টারনেট : ইন্টারনেটের মাধ্যমে যেকোনো খবর সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেওয়া যায় ।
  •   ইন্ট্রানেট : অনেক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তাদের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে ইন্টারনাল নেটওয়ার্ক স্থাপন করেন । একেই ইন্ট্রানেট বলে ।

অবশ্যই পড়ুন,

বেকার সমস্যা নিরসনা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিঃ

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অন্যতম হাতিয়ার হলো ইন্টারনেট । ইন্টারনেট বিকাশের ফলে বর্তমানে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর জন্য ঘরে বসে কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে । বিভিন্ন দেশের সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অফিস কার্যক্রম ডিজিটালাইজেশন করার ফলে বিভিন্ন নতুন নতুন কাজের সৃষ্টি হয় । যেমন— ওয়েবসাইট উন্নয়ন , রক্ষণাবেক্ষণ , মাসিক বেতন পেমেন্ট সিস্টেম , ভাতার বিল প্রস্তুতকরণ , অফিস অ্যাটেনডেন্স সিস্টেম , সফটওয়্যার রক্ষণাবেক্ষণ , অফিস ব্যবস্থাপনা , অফিসের কার্যক্রম সিসিটিভির মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ সহ দক্ষ জনবলের প্রয়োজন । এছাড়াও মোবাইল অপারেটর কোম্পানিতে বিপুল সংখ্যক কর্মীর কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে । স্কুল – কলেজে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির পাঠ সংযোজন করা হয়েছে। দেশের কলেজ – বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স পড়ানো হচ্ছে । দেশের তরুণ প্রজন্ম বিভিন্ন সফটওয়্যার -কাম্পানিতে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি নিজেরা কোম্পানি গড়ে তুলছে এবং বিশাল সংখ্যক তরুণ – তরুণ ব্যক্তিগত পর্যায়ে আউটসোর্সিং করে দেশের অর্থনীতিকে মজবুত করছে ।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির সাথে সাথে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে । ফলে বেকার সমস্যা নিরসন হবে।

কর্ম সৃজন ও কর্ম প্রাপ্তিতে তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকাঃ

বর্তমানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সমৃদ্ধ বিশ্বে কর্মসৃজন ও কর্ম প্রাপ্তি এক নতুন মাত্রা পেয়েছে । তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিপুল বিকাশের ফলে সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ একটি হলো নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি । 

তথ্য প্রযুক্তির বিকাশের ফলে কিছু কিছু সনাতনী কাজ বিলুপ্ত হয়েছে বা বেশ কিছু কাজের ধারা পরিবর্তিত হয়েছে বটে , তবে অসংখ্য নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে ।

এক গবেষণায় দেখা গেছে , প্রতি এক হাজার ইন্টারনেট সংযোগের ফলে নতুন ৮০ টি কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে । মানুষ এখন ঘরে বসেও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যাণে আয় করতে পারছে । সুতরাং বলা যায় , কর্মসৃজন ও কর্ম প্রাপ্তিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশ ও তথ্যপ্রযুক্তিঃ

বাংলাদেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার প্রায় সব যায়গায় চলে। জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে সচিবালয় , সরকারি বিভাগ , অধিদপ্তর , শাখা , সিটি কর্পোরেশন এমনকি ইউনিয়ন পরিষদগুলোকেও ডিজিটাল পদ্ধতির আওতায় আনা হয়েছে । সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ওয়াইফাই ব্যবস্থা চালু হয়েছে ।

ভর্তিপদ্ধতি , প্রশাসনিক কাজ , ক্লাস পদ্ধতি ডিজিটাল মাধ্যমে করা হচ্ছে । দেশে বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৯ কোটি ৮১ লাখ যার মধ্যে ৯ কোটি ২৪ লাখই মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ।

ওয়াইম্যাক্স গ্রহকের সংখ্যা ৪০ হাজারের আশপাশে , অন্যদিকে ব্রডব্যান্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৫৭ লাখ ৩৫ হাজার । প্রায় ১৫ কোটি ৭০ লাখ মানুষ মোবাইল ব্যবহার করে ।

কালিয়াকৈরে গড়ে উঠেছে সফটওয়্যার পার্ক । বিদেশ থেকে সহজে টাকা পাঠানোর জন্য চালু হয়েছে পে – পল পদ্ধতি । সরকারি বেসরকারি সকল ব্যাংক বর্তমানে অনলাইন ব্যাংকিং সেবা চালু করেছে । টেলিকমিউনিকেশন পদ্ধতিকে আরও উন্নত করার জন্য দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগ হয়েছে । এছাড়া সরকার বিভিন্ন আইসিটি কর্মসূচি হাতে নিয়েছে যা একটি পরিপূর্ণ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সহায়তা করবে । তারহীন উচ্চগতি ইন্টারনেট ওয়াইম্যাক্স সহজলভ্য হোক এবং সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ুক– এটাই সবার প্রত্যাশা । আশা করি , বাংলাদেশ সরকার দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল নেটওয়ার্কের কাজ তাড়াতাড়ি চালু করবে । বাংলাদেশের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ গ্রামে বাস করে । আমরা যদি গ্রামের মানুষকে তথ্যপ্রযুক্তির প্রতি আগ্রহী করতে পারি , তাহলেই বাংলাদেশকে ডিজিটাল দেশ হিেেসব গড়ে তোলা যাবে ।

দক্ষতা উন্নয়নে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিঃ

তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে একজন কর্মী অনেক বেশি দক্ষ হয়ে ওঠে । ফলে , অনেক প্রতিষ্ঠানই স্বল্প কর্মী দিয়ে বেশি কাজ করিয়ে নিতে পারে । উদাহরণ হিসেবে নিচের বিষয়গুলো বিবেচনা করা যেতে পারে –

• বিভিন্ন কারখানার বিপজ্জনক কাজগুলো মানুষের পরিবর্তে রোবট কিংবা স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের মাধ্যমে সম্পন্ন করা যেতে পারে ।

• কর্মস্থলে কর্মীদের উপস্থিতির সময়কাল , তাদের বেতন – ভাতাদি ইত্যাদি হিসাব করার জন্য বেশ কিছু কর্মীর প্রয়োজন হয় । কিন্তু স্বয়ংক্রিয় উপস্থিতি যন্ত্র , বেতন – ভাতাদি হিসাবের সফটওয়্যার ইত্যাদির ব্যবহারের মাধ্যমে এ সকল কাজ সম্পন্ন করা যায় ।

• বিভিন্ন গুদামে মালামাল সুসজ্জিত করার কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে করা যায় ।

• টেলিফোন এক্সচেঞ্জে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত ডিজিটাল ব্যবস্থার কারণে পৃথক জনবলের প্রয়োজন হয় না ।

• স্বয়ংক্রিয় ইন্টারেকটিভ ভয়েস প্রযুক্তি ব্যবহার করে দিন – রাত যেকোনো সময় গ্রাহকের নির্দিষ্ট প্রশ্নের জবাব দেওয়া যায় ।

• ব্যাংকের এটিএম এর মাধ্যমে যেকোনো সময় নগদ অর্থ তোলা যায় ।

 

অন্যদিকে আইসিটির কারণে অনেক কাজের ধরন প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে । এর মধ্যে রয়েছে –

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কর্মক্ষেত্রে টিকে থাকার জন্য নিজেকে ক্রমাগত দক্ষ করে তুলতে হয় । ফলে দক্ষতা উন্নয়নের কর্মসূচিতে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে ।

• কম্পিউটারের সাহায্যে অনেক ধরনের কাজ ঘরে বসেই করা সম্ভব হচ্ছে । আবার অনেক ক্ষেত্রে পূর্বে বিশেষ দক্ষতা না থাকলে যে কাজ সম্পন্ন করা যেত না , এরূপ অনেক কাজ কম্পিউটারের সহায়তায় সহজে সম্পন্ন করা যাচ্ছে । যেমন ফটোগ্রাফি বা ভিডিও এডিটিং ।

  •    অনেকে ঘরে বসে কাজ করছে । ফলে অনেক প্রতিষ্ঠানই এখন ভার্চুয়াল প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে । এ সকল প্রতিষ্ঠানে সহায়ক কর্মীর সংখ্যা যেমন কমেছে , তেমনি তাদের কাজের ধরনও পাল্টে গেছে ।
  •  স্বয়ংক্রিয়ভাবে মনিটরিং করা সম্ভব হওয়াতে কর্মীদের কাজে ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে , ইত্যাদি ।

 

তথ্য প্রযুক্তি ও আউটসোর্সিংঃ

ইন্টারনেটের বিকাশের ফলে বর্তমানে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর জন্য ঘরে বসে অন্য দেশের কাজ করে দেওয়ায় সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে । বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের নিজেদের অনেক কাজ , যেমন – ওয়েবসাইট উন্নয়ন , রক্ষণাবেক্ষণ , মাসিক বেতন ভাতার বিল প্রস্তুতকরণ , ওয়েবসাইটে তথ্য যোগ করা , সফটওয়্যার তৈরি ইত্যাদি অন্য দেশের কর্মীর মাধ্যমে সম্পন্ন করে থাকে । এটিকে বলা হয় আউটসোর্সিং ( Outsourcing ) । ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে যে কেউ এ ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে । এক্ষেত্রে কাজের দক্ষতার পাশাপাশি ভাষা দক্ষতাও সমানভাবে প্রয়োজন হয় । এই সকল কাজ ইন্টারনেটে অনেক সাইটে পাওয়া যায় । এর মধ্যে জনপ্রিয় কয়েকটি হলো ওডেস্ক ( www.odesk.com ) , ফ্রিল্যান্স ( www.freelancer.com ) , ইল্যান্স ( www.elance.com ) ইত্যাদি । বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় তিরিশ সহস্রাধিক মুক্ত পেশাজীবী এই সকল সাইটের মাধ্যমে আন্তকর্মসংস্থানে সক্ষম হয়েছে ।আমাদের দেশের অনেক তরুণ-তরুণী এই পেশার সাথে জড়িত। নিজে নিজে স্বাবলম্বী হয়া এবং উদ্দোক্তা হয়ার জন্য এই পেশা আমাদের দেশে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিঃ

পৃথিবীতে জ্ঞান অর্জনের একটা সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি দীর্ঘদিন থেকে মোটামুটি একইভাবে কাজ করে আসছিল । তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতি হওয়ার পর প্রথমবার সেই পদ্ধতির এক ধরনের পরিবর্তন হতে শুরু করেছে এবং ই – লার্নিং নামে নতুন কিছু শব্দের সাথে আমরা পরিচিত হতে শুরু করেছি ।

ই – লার্নিং শব্দটি ইলেকট্রনিক লার্নিং কথাটির সংক্ষিপ্ত রূপ এবং এটা বলতে আমরা পাঠদান করার জন্যে সিডি রম , ইন্টারনেট , ব্যক্তিগত নেটওয়ার্ক কিংবা : টেলিভিশন চ্যানেল ব্যবহার করার পদ্ধতিকে বুঝিয়ে থাকি । মনে রাখতে হবে ই – লার্নিং কিন্তু মোটেও সনাতন পদ্ধতিতে পাঠদানের বিকল্প নয় , এটি সনাতন পদ্ধতির পরিপূরক ।

উদাহরণ দেওয়ার জন্যে বলা যায় , শ্রেণিকক্ষে বিজ্ঞানের একটা বিষয় পড়ানোর সময় অনেক কিছুই হয়তো হাতে – কলমে দেখানো সম্ভব নয় । যেমন- সূর্যগ্রহণ , চন্দ্রগ্রহণ ইত্যাদি । শ্রেণিকক্ষে পাঠ দিতে দিতে শিক্ষক ইচ্ছে করলেই মাল্টিমিডিয়ার সাহায্য নিয়ে আরও সুন্দরভাবে বিষয়টির দৃশ্যমান উপস্থাপন করতে পারেন । সেটি এমনকি Interactive- ও হতে পারে ।

আমরা সবাই জানি বাংলাদেশের জনগোষ্ঠী বিশাল । সে কারণে স্কুলের শিক্ষার্থী সংখ্যাও বিশাল । নানা ধরনের অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা থাকার কারণে আমাদের স্কুলগুলোতে দক্ষ শিক্ষকের অভাব রয়েছে ।

লেখাপড়ার জন্যে প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ বলতে গেলে নেই । ল্যাবরেটরি অপ্রতুল , ফলে হাতে – কলমে বিজ্ঞানের এক্সপেরিমেন্ট করার সুযোগ খুব কম । এই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্যে ই – লার্নিং অনেক বড় একটা ভূমিকা রাখতে পারে । দক্ষ একজন শিক্ষকের পাঠদান ভিডিও করে নিয়ে সেটি অসংখ্য স্কুলে বিতরণ করা যেতে পারে ।

একটি নির্দিষ্ট বিষয়কে বোঝানোর জন্যে অনেক ধরনের সহায়ক প্রক্রিয়া ছাত্রছাত্রীদের দেয়া যেতে পারে । একজন শিক্ষক চাইলে নিজেই তার পাঠদানে সহায়তা করার জন্যে প্রয়োজনীয় বিষয় তৈরি করতে পারেন এবং সেটি বারবার ব্যবহার করতে পারেন । বাংলাদেশের অনেক শিক্ষকই এটি ব্যবহার করছেন ।

সারা পৃথিবীতেই ই – লার্নিংয়ের জন্যে নানা উপকরণ তৈরি হতে শুরু করেছে । পৃথিবীর বড় বড় অনেক বিশ্ববিদ্যালয় অসংখ্য কোর্স অনলাইনে উন্মুক্ত করে দিয়েছে এবং যে কেউ সেই কোর্সটি গ্রহণ করতে পারে । বিষয়টি নিয়ে নানা ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা হচ্ছে এবং অনেক সময়েই একজন সেই কোর্সটি নেয়ার পর তার হোমওয়ার্ক জমা দিয়ে কিংবা অনলাইনে পরীক্ষা দিয়ে সেই কোর্সটির প্রয়োজনীয় ক্রেডিট পর্যন্ত অর্জন করতে পারছে ।

আমাদের বাংলাদেশও এতে পিছিয়ে নেই । বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তিবিদরা এ ধরণের বেশ কিছু ওয়েব পোর্টাল তৈরি করেছেন এবং সারা পৃথিবী থেকে যে কেউ বাংলা ভাষায় সেই কোর্সগুলো গ্রহণ করতে পারে । বিশেষ করে কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে প্রশিক্ষণ নেয়ার উপযোগী এই ধরনের সাইটগুলো দেশে – বিদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে ।

আমাদের দেশে উত্তম পাঠদানের সীমাবদ্ধতা দূর করার ব্যাপারে ই – লার্নিং অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারলেও আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে , এটি কিন্তু কোনোভাবেই প্রচলিত পাঠদানের বিকল্প নয় । প্রচলিত পাঠদানের সময় একজন শিক্ষক তার শিক্ষার্থীদের সরাসরি দেখতে পারেন , তাদের সাথে কথা বলতে পারেন , শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের সাথে নানাভাবে ভাব বিনিময় করতে পারে , প্রশ্ন করতে পারে ।

শুধু তাই নয় , তারা পাশাপাশি একে অন্যকে সাহায্য করতে পারে , একে অন্যের সহযোগী হয়ে শিখতে পারে । ই – লার্নিংয়ের বেলায় এই বিষয়গুলো প্রায় সময়ই অনুপস্থিত থাকে , পুরো প্রক্রিয়ায় মানবিক অংশটুকু না থাকায় পদ্ধতিটা যান্ত্রিক বলে মনে হতে পারে । সে কারণে ই – লার্নিংকে সফল করতে হলে শিক্ষার্থীদের অনেক বেশি উদ্যোগী হতে হয় ।

আমাদের বাংলাদেশে ই – লার্নিংয়ের অনেক বড় সুযোগ আছে , কারণ অনেক বড় বড় সীমাবদ্ধতা আসলে ই লার্নিং ব্যবহার করে সমাধান করে ফেলা সম্ভব । তবে প্রচলিত ই – লার্নিংয়ের জন্যে ইন্টারনেটের স্পিড , প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এবং ইলার্নিংয়ের শিখনসামগ্রী ( Materials ) তৈরি করার প্রয়োজন রয়েছে ।

বর্তমান সরকার গুরুত্বের সাথে এ ধরণের শিখনসামগ্রী তৈরি করছে । এতে আমাদের শিক্ষার্থীরা বিশ্বমানের শিক্ষা অর্জনে সক্ষম হবে ।

চিকিৎসা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি 

চিকিৎসা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে কম্পিউটারের দ্বারা রোগ নির্ণয় ও ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণের কাজ করা হয় । ফলে ভুল হবার সম্ভাবনা কম থাকে । রোগ নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার পাওয়া যায় । রোগীর সব লক্ষণ ও রক্ত , মূত্র ইত্যাদি পরীক্ষার ফল কম্পিউটারে ইনপুট দিলে কম্পিউটার উভয়ের তুলনা করে সম্ভাব্য রোগ বলে দেয় । এছাড়া কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত I এছাড়াও কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত স্ক্যান্যার মস্তিষ্ক ও শরীরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট সূক্ষ্মভাবে বিচার করে কোথাও কোনো অস্বাভাবিকতা আছে কিনা বা থাকলে কী ধরনের অস্বাভাবিকতা আছে তা বলে দিতে পারে । চিকিৎসা ছাড়াও হাসপাতাল ও ক্লিনিকের প্রশাসনিক দক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য কম্পিউটার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । বর্তমানে ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা ও টিউমারের গঠন প্রকৃতি সম্পর্কে কম্পিউটারের সাহায্যে গবেষণা কাজ করা হয় । এছাড়া চোখের ক্ষমতা নির্ণয় , এক্স – রে ইত্যাদি অনেক পরীক্ষায় কাজ কম্পিউটর নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের সাহায্যে করা হয় । সম্প্রতি ভিডিও কনফারেন্সিং , ইন্টারনেট ইত্যাদি প্রযুক্তির সাহায্যে বহু দূরবর্তী স্থান থেকেও চিকিৎসা সুযোগ প্রদান ও গ্রহণ করা শুরু হয়েছে । একা টেলিমেডিসিন বলে। টেলিমেডিসিন হচ্ছে টেলিফোন বা মোবাইল ফোনের সাহায্যে চিকিৎসা সেবা নেওয়া । নানা কারণে এই ডাক্তারদের অনেকেই বড় শহরে থাকতে পছন্দ করেন , তাই অনেক সময়েই দেখা যায় ছোট শহরে বা গ্রামে অভিজ্ঞ ডাক্তারদের অভাব । অর্থাৎ দূর থেকে টেলিফোন বা মোবাইল প্রযুক্তির সাহায্যে স্বাস্থ্যবিষয়ক টিপস নেওয়াকে টেলিমেডিসিন বলা হয় । আমাদের দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান টেলিমেডিসিন সাহায্য নিয়ে এসেছে । বিশেষ করে টেলিভিশন চ্যানেলগুলো নিয়মিত স্বাস্থবিষয়ক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিনা খরচে জনগণের নিকট সম্প্রচার করে থাকে । যখন হাতের কাছে কোনো ডাক্তারকে জরুরি কিছু জিজ্ঞেস করার উপায় নেই , তখন টেলিমেডিসিন ব্যবহার করে ডাক্তারের সাহায্য নেওয়া যায় । এভাবেই চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে এক নতুন বিপ্লব ঘটাতে পারে ।

ব্যবসা বাণিজ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিঃ

জীবনের অন্য সকল ক্ষেত্রের মতো তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বা আইসিটির প্রয়োগ ব্যবসা – বাণিজ্যে আমূল পরিবর্তনের সূচনা করেছে । যেকোনো ব্যবসার মূল উদ্দেশ্য থাকে কম সময়ে এবং কম খরচে পণ্য বা সেবা উৎপাদন করা এবং দ্রুততম সময়ে তা ভোক্তার কাছে পৌছে দেওয়া । পণ্যের জন্য কাঁচামাল সংগ্রহ থেকে শরু করে উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত কর্মীদের ব্যবস্থাপনা , তাদের দক্ষতার মান উন্নয়ন , উৎপাদন ব্যবস্থাপনা , বিপণন এবং সবশেষে পণ্য বা সেবার বিনিময় মূল্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে আইসিটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে । হার্ডওয়্যার , সফটওয়্যারের সমন্বিত এবং উদ্ভাবনী প্রয়োগের মাধ্যমে ব্যবসায়ীগণ তাদের ব্যবসার উন্নয়নের পাশাপাশি মুনাফাও বাড়াতে পারে ।

ব্যবসা করতে হলে পণ্য বা বিপণন এবং প্রচারে আইসিটি প্রয়োগের ফলে বিপণনেও নতুন মাত্রা যোগ করা সম্ভব হয়েছে । উক্ত ক্ষেত্রগুলো হলো—

১. বাজার বিশ্লেষণ : যেকোনো নতুন পণ্য বা সেবা বাজারে চালু করার পূর্বে এ বিষয়ে বর্তমান বাজার সম্পর্ক জানার প্রয়োজন । আইসিটির মাধ্যমে এই সকল কাজ দ্রুততার সঙ্গে করা সম্ভব । প্রতিদ্বন্দ্বীদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ : প্রতিদ্বন্দ্বী পণ্য ও সেবা সম্পর্কে

২ . সহজে তথ্য সংগ্রহ করা যায় ।

৩. সরবরাহ : জিপিএস বা অনুরূপ ব্যবস্থাদির মাধ্যমে কম খরচে পণ্য সরবরাহের পরিকল্পনা করা যায় ।

৪. প্রচার : ওয়েবসাইট , ব্লগ কিংবা সামাজিক যোগাযোগের সাইটের মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে এবং কখনো কখনো বিনামূল্যে পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপন প্রচার করা যায় ।

 

 

গবেষণায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিঃ

 

তথ্য প্রযুক্তির কারণে গবেষণার জগতে শুধু যে একটা বিশাল উন্নতি হয়েছে তা নয় বলা যেতে পারে এখানে সম্পূর্ণ নতুন একটা মাত্রা যোগ হয়েছে । মানুষ এখন সাহিত্য , শিল্প বা সমাজবিজ্ঞান অথবা গণিত , প্রযুক্তি আর বিজ্ঞান , যা নিয়েই গবেষণা করুক না কেন তারা কম্পিউটার এবং তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্য ছাড়া সেই গবেষণার কথা চিন্তাও করতে পারে না ।

বর্তমানে সকল বৈজ্ঞানিক কর্মকাণ্ড কম্পিউটারের ওপর নির্ভরশীল । পদার্থের অণু – পরমাণুর গঠন প্রকৃতি , রাসায়নিক দ্রব্যের বিচার বিশ্লেষণে , জটিল গাণিতিক হিসাব – নিকাশে , প্রাণিকোষের গঠন । বর্ণমণ্ডলের মৌলিক পদার্থের অবস্থান নির্ণয়ে কম্পিউটার একটি প্রকৃতি বিশ্লেষণে , ঔষধের মান নিয়ন্ত্রণে , সূর্যের আলোকমণ্ডল ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ।

মহাকাশযান ডিজাইন , পাঠানোর পরিকল্পনা ও বাস্তাবয়ন কম্পিউটার দ্বারা দ্রুত সমাধান করা হয় । এছাড়াও গবেষণার কাজে বিভিন্ন ধরনের তথ্য উপাত্তের প্রয়োজন হয় । যা ইন্টারনেট ব্যবহার করে দ্রুত পাওয়া যায় । ফলে গবেষণার কাজ আরো দ্রুত তরান্বিত করে ।

Read more,

সরকারি কর্মকাণ্ডে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিঃ

 

২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রাণালয় অফিস আদালতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন । যাতে করে দেশের নাগরিক সেবা স্বচ্ছ ও সহজতর হয় । নিম্নে বিভিন্ন ধরনের সরকারি নাগরিক সেবার বর্ণনা দেওয়া হলো :

ক . জাতীয় ওয়েব পোর্টাল : সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক তথ্য ও দিক নির্দেশনা এবং চাকুরির খবর জাতীয় ওয়েব পোর্টালে পাবলিশ করে থাকে । যা সহজেই জনগণের কাছে তথ্য পৌছে যায় । এরুপ ওয়েব পোর্টালের নাম হচ্ছে— www.bangladesh.gov.bd .

খ . ই – পৰ্চা : জমি – জমা সংক্রান্ত বিভিন্ন দলিল এর সমস্যা ও দূর্নীতির রোধ করার জন্য সরকার ই – পর্চা সেবা চালু করেছেন । বর্তমানে দেশের ৩৪ টি জেলায় ই – সেবা কেন্দ্র থেকে জমির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে পারে ।

গ . ই – বুক : স্কুল , কলেজ ও মাদরাসার সকল পাঠ্যপুস্তক অনলাইনে সহজে প্রাপ্তির জন্য সরকারিভাবে একটি ই – বুক প্লাটফর্ম তৈরি করেছেন । যেমন— www.ebook.gov.bd

ঘ . ই – পুর্জি : আখ চাষিদের জন্য চিনিকলের পুর্জি ( ইক্ষু সরবরাহের অনুমতিপত্র ) স্বয়ংক্রিয়করণ করার লক্ষ্যে ই – পুর্জি সেবা চালু করা হয়েছে ।

ঙ . ই – স্বাস্থ্যসেবা : প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে যেখানে কোনো স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র নেই , সেখানে জনগণের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌছে দেওয়ার জন্য টেলিমেডিসিন সেবা কেন্দ্র গড়ে উঠেছে । সরাসরি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারে।

বিনোদন ও তথ্য প্রযুক্তিঃ

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে বিনোদনের জগতে একটা নতন দিক উন্মোচিত হয়েছে । এটি ঘটেছে দুইভাবে । প্রথমত , বিনোদনটি কীভাবে মানুষ গ্রহণ করবে সেই প্রক্রিয়াটিতে একটা মৌলিক পরিবর্তন হয়েছে । দ্বিতীয়ত , বিনোদনের ভিন্ন ভিন্ন মাধ্যমগুলোতে একটা গুণগত পরিবর্তন হয়েছে ।

তথ্যপ্রযুক্তি উন্নত হবার পর নতুন কিছু বিনোদনের জন্ম হয়েছে যেটি আগে উপভোগ করা সম্ভ ছিল না , তার একটি

তথ্যপ্রযুক্তি উন্নত হবার পর নতুন কিছু বিনোদনের জন্ম হয়েছে যেটি আগে উপভোগ করা সম্ভ ছিল না , তার একটি হচ্ছে কম্পিউটার গেম । সারা পৃথিবীতেই এখন কম্পিউটার গেমের বিশাল শিল্প তৈরি হয়েছে এবং নানা ধরনের কম্পিউটার গেমের জন্ম হয়েছে । কম্পিউটার গেমের ব্যাপক জনপ্রিয়তা দেখেই আমরা আন্দাজ করতে পারি এটি বিনোদনের অত্যন্ত সফল একটি মাধ্যম । এর সাফল্যের প্রধান একটি কারণ হচ্ছে এটি ছোট শিশু থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক একজন মানুষ সবাইকেই তার নিজের রুচি মাফিক আনন্দ দিতে পারে । একজন আরেক জনের সাথে কম্পিউটার গেম খেলতে পারে , কম্পিউটারের সাথে খেলতে পারে এমনকি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে বাইরের কারো সাথেও খেলতে পারে । সত্যি কথা বলতে কি , অনেক ক্ষেত্রেই এই বিনোদন উপভোগের তীব্রতা এত বেশি হতে পারে যে , সেটি এক ধরনের আসক্তির জন্ম দিতে পারে এবং সে কারণে কম্পিউটার গেম উপভোগ করার ব্যাপারে সারা পৃথিবীতেই সবাইকে সতর্ক থাকার কথা বলা হচ্ছে । তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন সৃষ্টির ব্যাপারেও এক ধরনের বড় ভূমিকা রেখেছে । অ্যানিমেশন বা কার্টুন তৈরি করা এক সময় অনেক কঠিন একটা বিষয় ছিল । তথ্যপ্রযুক্তি এবং শক্তিশালী কম্পিউটারের কারণে এখন এটি অনেক সহজ হয়ে গেছে । শুধু তাই নয় ত সৃষ্টিশীল মানুষের সৃজনশীলতার কারণে সম্পূর্ণ নতুন এক ধরনের ব্যাপার ঘটতে শুরু করেছে । সত্যিকারের ডি অভিনেতা অভিনেত্রী ছাড়াই গ্রাফিক্স নির্ভর চলচ্চিত্রের ডিজিটাল অভিনেতা – অভিনেত্রীর জন্ম হতে শুরু করেছে । দ বিখ্যাত ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রে কাল্পনিক প্রাণী ডাইনোসর কিংবা ভিন্ন জগতের প্রাণী তৈরি করার জন্যে শক্তিশালী কম্পিউটার ব্যবহার করা এখন অত্যন্ত সাধারণ একটি বিষয় ।

 

উপসংহারঃ

তথ্যপ্রযুক্তির এই সাফল্য শুনে কেউ যেন মনে না করে আমরা ইতোমধ্যে আমাদের লক্ষ্যে পৌছে গেছি- এি মোটেও সত্যি নয় । এই পথে আমাদের আরো দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে হবে । যেহেতু আমাদের দেশে বেশিরভাগ মানুষই গ্রামে থাকে। তাই তথ্যপ্রযুক্তির বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রথম ধাপ হচ্ছে এই গ্রামীণ মানুষের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সেবার আওতায় নিয়ে আসা । সেজন্য এখনো বিশাল অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে তথ্যপ্রযুক্তির পুরো সুবিধা পেতে হলে এক্ষেত্রে দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজন । স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালে লেখাপড়ার মান বাড়াতে হবে , আরো বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গে তুলতে হবে । ই – গভর্ন্যান্স এর মাধ্যমে সকল কাজে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে । নতুন প্রজন্মকে তাদে উদ্ভাবনী ক্ষমতা কাজে লাগাতে উৎসাহী করতে হবে । বিশ্ববিদ্যালয় এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিল্পে মধ্যে সমন্বয় করতে হবে । তাহলেই আমরা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ হতে পারবো।

 

রচনা প্রতিযোগিতার জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা (পিডিএফ)

 

পিডিএফ টি ডাউনলোড করাতে এখানে ক্লিক করুন

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *